কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জীবন ও সম্পদ রক্ষায় বাধ্য হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার পর বিভিন্ন মামলায় গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উচ্চ পর্যায়ের এক সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন।
কোটা আন্দোলন ঘিরে কী পরিমাণ গুলি ব্যবহার করা হয়েছে- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, খুবই ধৈর্যের সঙ্গে ধ্বংসযজ্ঞ মোকাবিলা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। একেবারে না পেরে সেনাবাহিনীকে আসতে হয়েছে। যেখানে না পেরেছে, সেখানে জীবন ও সম্পদ রক্ষায় গুলি করতে বাধ্য হয়েছে। সব হিসাব পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাখেন। কোনো একটি গুলি, কোনো একটি মৃত্যু যদি অনাকাঙ্ক্ষিত হয়, তাহলে একটা তদন্ত হয়, সেটা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিচার বিভাগীয় কমিশন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারাও একটি প্রতিবেদন দেবে, কী ঘটনা ঘটেছিল কয়েক দিনে। তখন আমরা সারা বিশ্বকে জানাতে পারবো কী ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিল স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি।
মন্ত্রী বলেন, অনেকেই বলছেন, আমরা গণগ্রেপ্তার করছি। আমরা কোনো গণগ্রেপ্তার করছি না। এমন কোনো জেলা নেই যেখানে তারা ধ্বংস না করলেও নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে। ধ্বংসগুলো আমরা সবাই দেখেছেন। তারা আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে, প্রাণহানি ঘটিয়েছে। আমরা কোনো নিরপরাধ মানুষকে গ্রেফতার করছি না। তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষ্য নিয়ে যাদের শনাক্ত করতে পেরেছি, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করবো না।
এর আগে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, কারফিউ, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ, চলমান বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনায় বসেন সাত মন্ত্রী, চার সচিব এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানরা।
বৈঠকে শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আলোচনায় যোগ দেন। এছাড়া বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব, বাণিজ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও জননিরাপত্তা বিভাগের দুই সচিবও যোগ দেন।
এছাড়া পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং র্যাব, বিজিবি ও আনসার প্রধানসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা এ আলোচনা সভায় যোগ দেন।